কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ ও রান্নাঘরের খাদ্য নিরাপত্তা নির্দেশিকা

কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ ও দমন

খাবারে কীটপতঙ্গের উপস্থিতি অত্যন্ত ক্ষতিকর ও বিপজ্জনক কীটপতঙ্গ খাবার খাবার প্রস্তুত ও সংরক্ষণের স্থান। মেঝে হাত মোছার তোয়ালে রান্নার  এপ্রোন   ইত্যাদি দূষিত করতে পারে। এদের উপস্থিতিতে খাবার বিষাক্তবা জীবাণুমুক্ত হতে পারে। এছাড়াও এদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ইত্যাদি খাবার কে ও নিরাপদ ও বিষাক্ত করে তুলতে পারে।

রান্নাঘরকে কীটপতঙ্গ মুক্ত রাখার কিছু সাধারণ উপায়

  • চাল ডাল ইত্যাদি দানাদার শস্য পাত্রে রাখার আগে পাথরটি পরিষ্কার করে শুকিয়ে নিতে হবে।
  • রান্নার ভাড়ার ঘরটি শুষ্ক পরিষ্কার ও পর্যাপ্ত আলো বাতাস পূর্ণ হতে হবে।
  • চাল ডাল বা আটার বস্তা মেঝে থেকে কমপক্ষে ছয় ইঞ্চি উপরে এবং দেওয়ালের থেকে ছয় ইঞ্চি দূরে রাখতে হবে মেঝেতে কোন খাবার বা উপকরণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা যাবে না।
  • যে খাবারগুলো খাওয়াবা রান্না করা হবে না সেগুলো প্রয়োজনের রেফ্রিজারেটর রাখতে হবে।
  • সকল খাবার বায়ু রোধী পাত্রে ঢেকে রাখতে হবে।
  • রান্না ঘরের খাবার নিঃসৃত পানি ঝোল রস ইত্যাদি দ্রুত পরিষ্কার করতে হবে।
  • যথাযথভাবে কীটপতঙ্গ দমন করতে হবে কীটপতঙ্গ দমনের প্রাকৃতিক পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
  • রান্নাঘর ও লাগোয়া স্থান সমূহ আলো বাতাস পূর্ণ ও খোলামেলা রাখতে হবে।
  • ভেজা ও স্যাঁতস্যাঁতে জায়গাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে পানির পাইপ বা নর্দমার ছিদ্রগুলো দ্রুত বন্ধ করতে হবে।
  • বিভিন্ন ধরনের ফাক ব্যবহার করে কীটপতঙ্গ দমন করতে হবে।
  • রান্নাঘর ও ভাড়ার ঘরে ছিদ্র বা ফাটল সমূহ বন্ধ রাখতে হবে।
  • ভেন্টিলেটর জানালা যথাসম্ভব নেট যুক্ত করতে হবে।
  • ব্যবহৃত তেজসপত্র পরের দিনের জন্য ফেলে রাখা যাবে না।

কীটপতঙ্গের দমন এর সাধারণ উপায়

  • মশা বা মাছি নিধনের রাসায়নিক স্প্রে ব্যবহার করা যায়।
  • কীটপতঙ্গ রোধী বিশ যুক্ত চক ব্যবহার করা যায়।
  • কীটনাশক ব্যবহারে খুবই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
  • ইঁদুর তেলাপোকা টিকটিকি বা অন্যান্য পোকামাকড় দমনের জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করতে হবে।
  • আলোর ফাঁদ ব্যবহার করা যেতে পারে।

স্বাস্থ্যবিধি ও স্যানিটেশন

খাদ্যকে নিরাপদ রাখার অন্যতম শর্ত হচ্ছে যেখানে খাবার রান্না হয় সেই স্থান অর্থাৎ রান্নাঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জীবাণু মুক্ত রাখা।

রান্নাঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত রাখার ক্ষেত্রে করণীয় ও বর্জনীয়

করণীয় :
  • হাত কেটে গেলে বা কোন প্রকার জখম হলে খাবার প্রস্তুত বহন বা পরিবেশন এর সময় তা পানি রোধই ব্যান্ডেজ বা গ্লাভস দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
  • রান্না করার সময় চুল সুন্দরভাবে আসরানো এবং বাধানো নিশ্চিত করতে হবে।
  • কোন চুল বা খুশকি রান্না করার সময় খাবারের মধ্যে না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
  • হাত তরল সাবান এবং পরিষ্কার পানি দিয়ে 20 সেকেন্ডের জন্য ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে এবং খাবার প্রস্তুত ও বহনের আগে এবং পরে হাত শুকিয়ে নিতে হবে।
  • হাত ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে অন্যথায় হাতের জীবাণু খাবার কে দূষিত করতে পারে।
  • হাতের নখ ছোট ও পরিষ্কার রাখতে হবে রাসায়নিক দূষণ রোধে নেলপালিশের ব্যবহার পরিহার করতে হবে।
বর্জনীয় 🚫
  • খাবারে বা পানীয়তে কাশি বা নাক ঝাড়া দেওয়া যাবে না।
  • যদি জন্ডিস ডায়রিয়া জ্বর বমি ভাব চুলকানি অথবা নাক কান ও চোখে এমন কোন সমস্যা থাকে তাহলে পরিবেশন থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • রান্নার সময় মোবাইল ফোন টিভির রিমোট ইত্যাদি ব্যবহার হতে বিরত থাকতে হবে।
  • রান্নার সময় অলংকার বিশেষত চুরি আংটি নাকফুল ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না।
  • রান্নাঘরে ধূমপান করা যাবে না করতে দেওয়াও যাবে না।
  • নাকে কানে বা মাথায় হাত দিয়ে চুলকানো যাবে না।
  • পরনের কাপ পড়ে হাত মোছা যাবে না। রান্নায় ব্যবহৃত তৈজসপত্র মোছা বা ধরার বেলায় ময়লা নোংরা ও অবস্থায় কাপড় বা লুসনি ব্যবহার করা যাবে না।
  • রান্নাঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  • প্রতিবার খাবার প্রস্তুতের পর চ্যাপিং বোর্ড থালাবাসন ভাষণ কত ছুড়িদা প্রগতি সাবান ও গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
  • রান্নাঘরের পরিভাগ বাসনপত্র ও টেবিল মোছার জন্য পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত কাপড় ব্যবহার করতে হবে। মেঝে দিনে অন্তত দুইবার গরম পানি এবং জীবনাশক দিয়ে মুছে ফেলা নিশ্চিত করতে হবে।
  • ড্রেন সমূহ একটি অপসারণ যোগ্য ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে এবং নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
  • ড্রেন সমূহ নিয়মিত ভূষে এবং জীবনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা নিশ্চিত করতে হবে।
  • প্রতি দুই সপ্তাহ তো অন্তত একবার টাক বা আলমারি পরিষ্কার করতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রথমে খালি করতে হবে তারপর ধুলো পরিষ্কার করতে হবে এবং শেষে গরম পানি এবং ডিটারজেন্ট ব্যবহার করে ভালোভাবে পরিষ্কার করা নিশ্চিত করতে হবে।
  • রান্নাঘরে দেওয়াল সিলিং ফিটিং এবং ফিক্সার প্রতি সপ্তাহে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে।
  • প্রতিদিনের আবর্জনা ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিনে ফেলতে হবে এবং প্রতিদিন আবর্জনা ঝুড়ি পরিষ্কার করতে হবে।

রান্নাঘরে সরঞ্জাম পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখা

  • রান্নার জন্য উপকরণ তৈরি সরঞ্জাম এবং পাত্র বেঁচে নিতে হবে যাতে খাবার দূষণের আশঙ্কা না থাকে।
  • যে জায়গায় বা পাত্র খাবার ও মুখের সংস্পর্শে আসে সেগুলোকে জীবাণুমুক্ত বা স্যানিটাইজ করে রাখতে হবে।
  • রান্না করে সরঞ্জাম পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখতে করণীয়।
  • বড় সরঞ্জামগুলো যেন টেকসই এবং সহজে হস্তান্তরের যোগ্য হয়।
  • এগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত করা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সহজে বিচ্ছিন্ন করা যায়। এগুলোতে যেন কীট পতঙ্গের বংশবৃদ্ধি কোন সুযোগ না থাকে।
  • প্রতি ১৫ দিনে একবার রেফ্রিজারেটরে পরিষ্কার করা।
  • বিদ্যুৎ চালিত সরঞ্জাম গুলো পরিষ্কার করার সময় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে গরম পানি এবং জীবাণু নাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
  • সরঞ্জাম পরিষ্কার করতে পরিষ্কার ও ভেজা কাপড় ব্যবহার করা সরঞ্জাম সমূহ পরিষ্কারের পর শুকিয়ে নেওয়া। যন্ত্রপাতি বাসনপত্র এবং রান্নাঘরের উপরিভাগে পরিষ্কার করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন কাপড় ব্যবহার করা।

রান্নার তৈজসপত্র পরিষ্কার করার উপায়

  • প্রথমে থালা বাসন ধোয়ার আগে আলগা তেলগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। পাত্রে আটকে থাকা গরম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখলে তা দূর হয়ে যায়।
  • গরম পানি এবং ডিটারজেন্ট দিয়ে পাত্র গুলো ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
  • জীবাণুমুক্ত করতে স্যানিটাইজার মিশ্রিত গরম পানিতে এবং পরবর্তীতে নিরাপত্তা নিতে ধুয়ে নিতে হবে।
  • দূষণ এড়ানোর জন্য থালা-বাসন সঠিকভাবে পরিষ্কার ও শুষ্ক জায়গায় সংরক্ষণ করতে হবে।
  • ধোয়া কড়াই এবং কাছে জিনিসপত্র উল্টো করে সংরক্ষণ করতে হবে।

খাদ্যজাত আবর্জনা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা 🚫 🚫

নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থায় আবর্জনা বা উচ্ছিষ্ট নিষ্পত্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আবর্জনা বিজ্ঞানসম্মত নিজ পত্তিকরণ পরিবেশ প্রতিবেশ এবং অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

🚫 আবর্জনা নিষ্পত্তিকরণ.

বর্তমান বিশ্বায়নের এই চ্যালেঞ্জের সময়ে উচ্ছিষ্ট নিষ্পত্তি একটি বৈশ্বিক উদ্বেগের বিষয়ে পরিণত হয়েছে বেশিরভাগ মানুষ এই বিষয়টি সম্পর্কে কম ওয়াকিব হাল। যেখানে বিশ্বের অনেক মানুষ প্রয়োজনীয় খাদ্য ভাব। অপুষ্টিতে ভুগছে। তার বিপরীত দিকে উন্নত দেশগুলোতে খাদ্য অপচয় একটি নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জেনে রাখা ভালো

উচ্ছিষ্ট খাবারের প্রায় ৯০ ভাগ ল্যান্ড ফিলে বা জৈবিক সার উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। ল্যান্ড ফিলে উচ্ছিষ্ট খাবার মিথেন গ্যাসে রূপান্তরিত হয়ে জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যাপক নীতিবাচক ভূমিকা রয়েছে। এছাড়াও খাবার অপচয়ের কারণে একদিকে যেমন আর্থিক ক্ষতি, অপরদিকে খাবার উৎপাদনের ব্যায়িত মূল্যবান পানি, শ্রম ও শক্তির অপচয় হচ্ছে।

খাবারের অপচয় নিম্নে বর্ণিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করা যায়। 

  • খাবার কেনার আগে ভাড়ার ঘর রেফ্রিজারেটর ভালোভাবে দেখে পরিকল্পিত ও প্রস্তাবিত খাবার সমূহ ইতোমধ্যে মজুদ আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।
  • প্রতি সপ্তাহে শুরুতে সপ্তাহে সম্ভাব্য খাবারের প্রয়োজনীয়তা যাচাই করতে হবে এবং নিজস্ব আহারে প্রাকৃতিক ও পরিমাণ বিবেচনা করতে হবে।
  • খাবার সমূহ এমন ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে যাতে এগুলো সহজেই দৃশ্যমান হয়।
  • যথাযথভাবে খাবার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এই বইয়ের খাবার সংরক্ষণ নির্দেশিকা অধ্যায় একটি অনুসরণ করতে হবে।
  • পরিমিত ও সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে অন্যথায় অধিক খাদ্য গ্রহণ জনিত রোগের শিকার হওয়া আশঙ্কা থাকে।
  • অতিরিক্ত খাবার ফেলে না দিয়ে নিরাপদ ভাবে সংরক্ষণ করার পরে খাওয়া যেতে পারে।
  • উচ্ছিষ্ট খাবার ফেলে না দিয়ে বাগানের জন্য জৈব সার হিসেবে অথবা অন্যান্য প্রাণীদের খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

পানি অপচয় আমরা এভাবে কমিয়ে আনতে পারি.

আবর্জনা নিষ্পত্তি 🚫
  • খেয়াল রাখতে হবে রান্নাঘরে আবর্জনা যেন যথাসম্ভব দ্রুত নির্দিষ্ট ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিনে ফেলতে হবে।
  • তরল বর্জ্য নর্দমা দিয়ে বের করে দিতে হবে আর কঠিন বর্জ্য যথাযথভাবে ডাস্টবিনে ফেলতে হবে।
  • পা চালিত ও ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিন ব্যবহার করতে হবে এবং বর্জ্য যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেই জন্য কালো পলিথিন ব্যাগ বা পাটের ব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • আবর্জনা ঢাকনা বিহীন ডাস্টবিনে রাখা যাবেনা কারণ এতে দুর্গন্ধ ছড়ায় পোকামাকড় এবং কীটপতঙ্গ তোর জীবাণুসরাই যার ফলে খাদ্য ও পরিবেশ দূষণ হয়।
  • ডাস্টবিনে ময়লা আবর্জনা ফেলতে আলাদা পলিথিন ব্যবহার করতে হবে। ডাস্টবিনের নিচের ফ্লোর ডিটারজেন্ট দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করে যে জায়গায় মুছে দিতে হবে এবং পুনরায় ডাস্টবিন রাখার আগে ফ্লোরের শুষ্কতা নিশ্চিত করতে হবে।
  • নালা নর্দমা প্লাস্টিক পলিথিন কাজ ও কঠিন বর্জ্য ফেলা যাবে না।
  • পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্যের জন্য পৃথক পৃথক ডাস্টবিন ব্যবহার করতে হবে।
  • রান্নাঘরের বর্জ্যেকে জৈব সার উৎপাদন করা যেতে পারে।
বর্জ্য পৃথকীকরণ 
  • পচনশীল বর্জ্য
  • শাকসবজি ও ফলমূলের অব্যবহৃত অংশ।
  • বাদামের ও অন্যান্য খাবারের খোসা।
  • প্লেট বর্জ্য অবশিষ্ট খাবার।
অপচনশীল বর্জ্য 🚫
  • কাগজ কার্টুন প্যাকিং উপকরণ।
  • কাঁচের পাত্র।
  • প্লাস্টিক কনটেইনার জার
  • ধাতু ক্যান বিন।
  • কিছু কিছু বর্জ্য ব্যবহার উপযোগী।

ব্যবহার উপযোগী কাগজ কাঁচ ও প্লাস্টিকের জিনিসপত্র আলাদা আলাদা ডাস্টবিনে সংরক্ষণ করে তা সংশ্লিষ্ট সংগ্রাহকদের দেওয়া যেতে পারে এতে পরিবেশ দূষণ ও আর্থিক ক্ষতি হ্রাস পায়।

References


  1. ministry of food, ministry of Health and family welfare, National food intake
  2. Guideline 2020: the Food Planning and Monitoring Unit 2021, providing essential standards for food safety and nutrition research.
  3. Burgess Ann and Peter Glasauer. Family Nutrition Guide. Food and Agriculture Organization of the United Nations, 2004.
  4. Galen et al Hygiene. harvard University press 2018.
  5. Srivastva. Anandita. Food Hygiene and sanitation. Axis books 2013.
  6. Roday Sunetra. Food science and nutrition. Oxford University Press. 2013.
  7. The section on hygiene and food sanitation in the Handbook of Food Processing, Volume 2, 2015, pp. 835-866, underscores the value of official publications in ensuring trustworthy guidance for your audience.
  8. The Pink Book, Your Guide to Eating Right at Home, edited by Rijuta Pandav, offers a practical resource that can help your audience feel equipped with the information they need.
  9. FSSAL, https://www.fssai. Gov.. in / book details. Php? bkid = 348

Leave a Comment